ঢাকা   ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ । ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম
ভারত থেকে আবারও এক হাজার ৯০০ মেট্রিক টন আলু আমদানি ভারতের ট্যুরিস্ট ও বিজনেস ভিসা বন্ধ, বেনাপোল বন্দর দিয়ে যাত্রী পারপার অর্ধেকের নিচে অন্তর্বর্তী সরকারই তত্ত্বাবধায়ক সরকারে রূপান্তরিত হতে পারে: অ্যাটর্নি জেনারেল মৌলভীবাজার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে বিজয় দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে মৌলভীবাজার স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পন করে শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে সর্বস্তরের মানুষের ঢল। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে মৌলভীবাজার জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা পুলিশ সদস্য এবং শহীদ পরিবারের সদস্যদের সম্মাননা। রাজারবাগ পুলিশ স্মৃতিসৌধে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার শ্রদ্ধা নিবেদন। বর্ণীল আয়োজনে শার্শা প্রশাসনের বিজয় দিবস উদযাপন ভারত থেকে শুল্কমুক্ত চাল আসলেও বাজারে কোনো প্রভাব নেই। যশোরের শার্শায় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

নিউমোনিয়ায় বছরে ২৪ হাজার শিশুর মৃত্যু

নির্মল বার্তা
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ১২, ২০২০
  • 87 Time View
নিউমোনিয়া

দেশে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে প্রতিবছর পাঁচ বছরের কম বয়সী ২৪ হাজার ৩০০ শিশু মারা যাচ্ছে। এর মধ্যে ৫২ শতাংশ ক্ষেত্রেই দেখা গেছে, তারা বাড়িতে এবং কোনো ধরনের চিকিৎসা না পেয়েই মারা যাচ্ছে। বাকিদের মধ্যে তিন শতাংশ বাড়িতে চিকিৎসা নিয়ে মারা গেলেও হাসপাতালে অথবা স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নেওয়ার পরও ৪৫ শতাংশ শিশু মারা যাচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দেশে নিউমোনিয়া প্রতিরোধের বিষয়টি যে পরিমাণ গুরুত্ব পাওয়ার কথা, ততটা পাচ্ছে না। আর তাই প্রতিদিন গড়ে ৬৬ জন শিশুর মৃত্যু হচ্ছে এই রোগে। এই সংখ্যা দেশে মোট শিশুমৃত্যুর ১৮ শতাংশ। আর তাই বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিউমোনিয়ার উপসর্গ থাকলে শিশুকে বাড়িতে না রেখে দ্রুত স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে। একইসঙ্গে নিউমোনিয়া প্রতিরোধ করতে হলে এর কারণ জানার উদ্যোগ নেওয়াও জরুরি।

বুধবার (১১ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্রে, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর,বি) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়। ১২ নভেম্বর বিশ্ব নিউমোনিয়া দিবস উপলক্ষে রিসার্চ ফর ডিসিশন মেকার্স (আরডিএম) এবং ডেটা ফর ইমপ্যাক্ট (ডিফরআই) এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।

দেশে গত দুই দশকে স্বাস্থ্য খাতে অনেক উন্নতি হয়েছে উল্লেখ করে সভার সূচনা বক্তব্যে আইসিডিডিআর,বি’র মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্য বিভাগের গবেষণা প্রধান কামরুন নাহার বলেন, শিশুমৃত্যু কমানোর ক্ষেত্রেও বাংলাদেশে অগ্রগতি রয়েছে। কিন্তু এখনো নিউমোনিয়ার কারণে প্রতিবছর পাঁচ বছরের কম বয়সী ২৪ হাজার শিশু মারা যাচ্ছে। কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে বিশ্বের অন্যান্য দেশের দিকে যদি আমরা তাকাই, তবে দেখতে পাব— এই সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা তারাও করছে।

সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আইসিডিডিআর,বি’র মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্য বিভাগের সহযোগী বিজ্ঞানী আহমেদ এহসানুর রহমান। মূল প্রবন্ধে তিনি বলেন, ২০১১ সালে দেশে জীবিত অবস্থায় জন্ম নেওয়ার পর পাঁচ বছরের কম বয়সী প্রতি একহাজার শিশুর মধ্যে ১১ দশমিক ৭টি শিশু মারা যেত নিউমোনিয়াতে। বর্তমানে সেটি প্রতি হাজারে ৮ দশমিক ১-এ নেমে এসেছে। বৈশ্বিক লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী, ২০২৫ সালের মধ্যে প্রতি এক হাজার জীবিত অবস্থায় জন্ম নেওয়া শিশুর মধ্যে মৃত্যুর সংখ্যা তিনে নামিয়ে আনতে হবে।

তিনি বলেন, দেশে যেসব শিশু নিউমোনিয়ায় মারা যায়, তার ৫২ শতাংশই মারা যাচ্ছে বাড়িতে। তারা কোনো ধরনের চিকিৎসাও পায় না। অন্যদিকে, তিন শতাংশ শিশু চিকিৎসা পেয়েও বাড়িতে মারা যাচ্ছে। আবার হাসপাতালে বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসার পরও নিউমোনিয়ায় মারা যাচ্ছে ৪৫ শতাংশ শিশু। তাই নিউমোনিয়ার লক্ষণ চিহ্নিত শিশুদের বাড়িতে আর রাখা যাবে না।

এহসানুর রহমান আরও বলেন, নিউমোনিয়াতে শিশুরা হাইপোক্সেমিয়ায় (রক্তে অক্সিজেনের স্বল্পতা) বেশি মারা যায়। কোভিডের সময় এটা আরও বেশি। যেসব শিশুর অক্সিজেনের স্বল্পতা থাকে, তাদের নিউমোনিয়ায় মৃত্যুহার বেশি। তাই প্রতিটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পালস অক্সিমিটার থাকা জরুরি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) নিউমোনিয়ায় মৃত্যু কমাতে হাসপাতালগুলোতে ১০টি বিষয় নিশ্চিত করার কথা বলেছে। কিন্তু ২০১৭ সালে দেখা গেছে, বাংলাদেশের জেলা হাসপাতালগুলোতে এই ১০টি বিষয়ের শতভাগের মধ্যে মাত্র ৫ শতাংশ রয়েছে।

চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সমীর সাহা বলেন, নিউমোনিয়া কোন জীবাণু দ্বারা হচ্ছে, সেটির ৫০ শতাংশই এখনো অজানা। সেটি কি ভাইরাসের মাধ্যমে হচ্ছে, নাকি ব্যাকটেরিয়ার মাধ্যমে— তা জানা নেই। এটি জানার উপায় আছে, কিন্তু ইচ্ছা নেই। নিউমোনিয়া প্রতিরোধ করতে হলে এর কারণ জানার উদ্যোগ নিতে হবে।

তিনি বলেন, নিউমোনিয়ায় শিশু মৃত্যুর অন্যতম কারণ আক্রান্ত হওয়ার পর অনেক দেরিতে হাসপাতালে নিয়ে আসা। অপুষ্টিতে আক্রান্ত শিশুদের নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। এছাড়া হাসপাতাল থেকে ফিরিয়ে দেওয়া, এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে ছুটোছুটির কারণে বছরে বিপুলসংখ্যক শিশুর মৃত্যু হয়।

আইসিডিডিআর,বি’র পুষ্টি ও ক্লিনিক্যাল সার্ভিস বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী ডা. মোহাম্মদ জোবায়ের চিশতি বলেন, নিউমোনিয়ায় মৃত্যু প্রতিরোধের আগে নিউমোনিয়া প্রতিরোধ করতে হবে। যেসব শিশু অপুষ্টিতে ভোগে, নিউমোনিয়ায় তাদের মারা যাওয়ার ঝুঁকি বাকিদের চেয়ে ২০ গুণ বেশি। আর আমাদের দেশে অভিভাবকরা ডায়রিয়া হলেও সচেতন হন, কিন্তু নিউমোনিয়া হলে সচেতন হন না।

অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্য দেন ইউএসএইড বাংলাদেশের মনিটরিং, ইভালুয়েশন অ্যান্ড রিসার্চের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা কান্তা জামিল। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আরডিএম অ্যাক্টিভিটির চিফ অব পার্টি ও আইসিডিডিআর,বি’র মাতৃ ও শিশুস্বাস্থ্য বিভাগের সিনিয়র ডিরেক্টর ড. শামস এল আরেফিন।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

আধুনিক চক্ষু হাসপাতাল, শমসের নগর রোড, মৌলভীবাজার

© All rights reserved © 2018 News Smart
Develoved by Bongshai IT